রোজা ভঙ্গের ১৫ টি কারণ | কি কি কারণে রোজা ভেঙে যায়


ইসলামী শরিয়ামতে, সিয়ামের শুদ্ধতা ও যথার্থতার জন্য নির্ধারিত কিছু বিধিবিধান রয়েছে, যার ব্যতিক্রম ঘটলে রোজা ভঙ্গ হয়, অন্যথায় মাকরুহ হয়ে যায়। মহান আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক মুমিন বান্দাকে রমজান মাসে ফরজ রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। যে ব্যক্তি রমজান মাসে রোজা রাখবে না বা ভঙ্গ করবে তার জন্য জান্নাতে প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়বে।

প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ ও সবল মুমিনের জন্য রোজা রাখা আবশ্যক। শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকার নামই রোজা নয়; বরং রোজা রাখা অবস্থায় মেনে চলতে হয় বেশ কিছু নিয়মও।

 

রোজা ভঙ্গের কারণসমূহঃ

১. ইচ্ছা করে বমি করা

২. বমির বেশির ভাগ মুখে আসার পর তা গিলে ফেলা

৩. মেয়েদের মাসিক ও সন্তান প্রসবের পর ঋতুস্রাব

৪. ইসলাম ত্যাগ করলে

৫. গ্লুকোজ বা শক্তিবর্ধক ইনজেকশন বা সেলাইন দিলে

৬. প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে ওষুধ বা অন্য কিছু শরীরে প্রবেশ করালে

৭. রোজাদারকে জোর করে কেউ কিছু খাওয়ালে

৮. ইফতারের সময় হয়েছে ভেবে সূর্যাস্তের আগে ইফতার করলে

৯. মুখ ভরে বমি করলে

১০. ভুলবশত কোনো কিছু খেয়ে, রোজা ভেঙে গেছে ভেবে ইচ্ছা করে আরও কিছু খেলে

১১. বৃষ্টির পানি মুখে পড়ার পর তা খেয়ে ফেললে

১২. কান বা নাক দিয়ে ওষুধ প্রবেশ করালে

১৩. জিহ্বা দিয়ে দাঁতের ফাঁক থেকে ছোলা পরিমাণ কোনো কিছু বের করে খেয়ে ফেললে

১৪. অল্প বমি মুখে আসার পর ইচ্ছাকৃতভাবে তা গিলে ফেললে

১৫. রোজা স্মরণ থাকা অবস্থায় অজুতে কুলি বা নাকে পানি দেয়ার সময় ভেতরে পানি চলে গেলে। (ফাতাওয়ায়ে শামি ও ফাতাওয়ায়ে আলমগীর)।

 

ইসলামি চিন্তাবিদ শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, রোজার প্রথম শর্ত হলো, একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কোনো কিছু পান ও আহার না করা। এ সময় সব ধরনের শারীরিক সম্পর্ক নিষিদ্ধ। তবে স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভঙ্গ হয় না।

তিনি বলেন, ‘রোজা ভঙ্গ হয় না; তবু রোজা ভঙ্গের কারণ হিসেবে কিছু বিষয় আমরা মনে করে থাকি। যেমন, সুগন্ধি ব্যবহার করা (তবে উগ্র গন্ধের সুগন্ধি ব্যবহার পরিহার করা উচিৎ), বারবার থুতু ফেলা বা থুতু গিলে ফেলা, মেছওয়াক করা, সাজসজ্জা করা, হাতের নখ বা চুল কাটা এসবে রোজা ভঙ্গ হয় না।’

আহমাদুল্লাহ আরও বলেন, রোজা রেখে মিথ্যা কথা বললে রোজার প্রাণ হারিয়ে যায়। মূর্খতার মতো আচরণ, অন্যায় করা, প্রতারণা করা, অন্যের হক নষ্ট করা, ঘুষ খাওয়া, অন্যকে ঠকানো–এগুলো রোজা রেখে করা বেমানান। রোজা রেখে এসব করলে রোজা প্রাণহীন দেহের মতো হয়ে যায়।

এছাড়াও কিডনী ডায়ালাইসিস এর ক্ষেত্রে রোগীর শরীর থেকে রক্ত বের করে সে রক্ত পরিশোধন করে কিছু কেমিক্যাল ও খাদ্য উপাদান (যেমন— সুগার ও লবণ ইত্যাদি) যোগ করে সে রক্ত পুনরায় শরীরে পুশ করা হয়; এতে করে রোযা ভেঙ্গে যাবে। [ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্র (১০/১৯)]

শিঙ্গা লাগানোর মাধ্যমে রক্ত বের করা। দলিল হচ্ছে— নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “যে ব্যক্তি শিঙ্গা লাগায় ও যার শিঙ্গা লাগানো হয় উভয়ের রোযা ভেঙ্গে যাবে।” [সুনানে আবু দাউদ (২৩৬৭), আলবানী সহিহ আবু দাউদ গ্রন্থে (২০৪৭) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]

রক্ত দেয়াও শিঙ্গা লাগানোর পর্যায়ভুক্ত। কারণ রক্ত দেয়ার ফলে শরীরের উপর শিঙ্গা লাগানোর মত প্রভাব পড়ে। তাই রোযাদারের জন্য রক্ত দেয়া জায়েয নেই। তবে যদি অনন্যোপায় কোন রোগীকে রক্ত দেয়া লাগে তাহলে রক্ত দেয়া জায়েয হবে। রক্ত দানকারীর রোযা ভেঙ্গে যাবে এবং সে দিনের রোযা কাযা করবে। [শাইখ উছাইমীনের ‘মাজালিসু শারহি রামাদান’ পৃষ্ঠা-৭১]

 

এমন কিছু বিষয় যেগুলো রোযা নষ্ট করে নাঃ

–এনিমা ব্যবহার, চোখে কিংবা কানে ড্রপ দেয়া, দাঁত তোলা, কোন ক্ষতস্থানের চিকিৎসা নেয়া ইত্যাদি রোযা ভঙ্গ করবে না। [মাজমুউ ফাতাওয়া শাইখুল ইসলাম (২৫/২৩৩, ২৫/২৪৫)]

–হাঁপানি রোগের চিকিৎসা কিংবা অন্য কোন রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে জিহ্বার নীচে যে ট্যাবলেট রাখা হয় সেটা থেকে নির্গত কোন পদার্থ গলার ভিতরে চলে না গেলে সেটা রোযা নষ্ট করবে না।

–স্পেকুলাম বা আইইউডি বা এ জাতীয় কোন মেডিকেল যন্ত্রপাতি জরায়ুর ভেতরে প্রবেশ করালে।

–নারী বা পুরুষের মুত্রনালী দিয়ে যা কিছু প্রবেশ করানো হয়; যেমন- ক্যাথিটার, সিস্টোস্কোপ, এক্সরে এর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত রঞ্জক পদার্থ, ঔষধ, মুত্রথলি পরিস্কার করার জন্য প্রবেশকৃত দ্রবণ।

–মেসওয়াক দিয়ে কিংবা ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিস্কার করা; যদি ব্যক্তি কোন কিছু গলায় চলে গেলে সেগুলো গিলে না ফেলে।

–গড়গড়া কুলি যদি গলায় চলে আসলেও ব্যক্তি সেটা গিলে না ফেলে।

–অক্সিজেন, এ্যানেসথেসিয়ার জন্য ব্যবহৃত গ্যাস রোযা ভঙ্গ করবে না; যদি না রোগীকে এর সাথে কোন খাদ্য-দ্রবণ দেয়া হয়।

–চামড়া দিয়ে শরীরে যা কিছু প্রবেশ করে। যেমন- তৈল, মলম, মেডিসিন ও কেমিকেল সম্বলিত ডাক্তারি প্লাস্টার।

–ডাগায়নস্টিক ছবি তোলা কিংবা চিকিৎসার উদ্দেশ্যে হৃৎপিণ্ডের ধমনীতে কিংবা শরীরের অন্য কোন অঙ্গের শিরাতে ছোট একটি টিউব প্রবেশ করানোতে রোযা ভঙ্গ হবে না।

–নাড়ীভুড়ি পরীক্ষা করার জন্য কিংবা অন্য কোন সার্জিকাল অপারেশনের জন্য পেটের ভেতর একটি মেডিকেল স্কোপ প্রবেশ করালেও রোযা ভাঙ্গবে না।

— কলিজা কিংবা অন্য কোন অঙ্গের নমুনাস্বরূপ কিছু অংশ সংগ্রহ করলেও রোযা ভাঙ্গবে না; যদি এ ক্ষেত্রে কোন দ্রবণ গ্রহণ করতে না হয়।

— গ্যাসট্রোস্কোপ (Gastroscope) যদিপাকস্থলীতে ঢুকানো তাতে রোযা ভঙ্গ হবে না; যদি না সাথে কোন দ্রবণ ঢুকানো না হয়।

 

তবে সর্বপূরী আল্লাহই সব ভাল জানেন।

 

Search Keywords:

রোজা ভাঙার কারণ কয়টি ও কি কি, রোজা কি কি কারনে মাকরুহ হয়, সহবাস করলে কি রোজা ভাঙ্গে, কি কি কারণে রোজা ভঙ্গ হয় না, যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায়, যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায়, মুখের লালা খেলে কি রোজা ভেঙ্গে যায়, রোজা রেখে সাবান দিয়ে গোসল করা যাবে, রোজা রেখে মুখের লালা খাওয়া যাবে কি, রোজা রেখে স্ত্রীকে চুমু দেওয়া যাবে, পাতলা পায়খানা হলে কি রোজা ভেঙ্গে যাবে, রোজা রেখে কান চুলকানো যাবে, যেসব অবস্থায় সাওম ভাঙা বৈধ, রোজা অবস্থায় ইনজেকশন দেওয়া যাবে কি, কিছু বিষয় উল্লেখ করব যেগুলো রোযা নষ্ট করে না,

Roja vangar dua, Oju vangar karon, Bomi korle ki roja venge jai, ki ki karone roja vange karon, reasons of breaking roja, Reasons of breaking roja in islam, Reasons of breaking roja islamic answer, Reasons of breaking roja hanafi, List of things that will break your fast Islam, List of things that will break your fast Christian, Reasons for breaking fast, What breaks your fast intermittent fasting, Break your fast meaning, roja vangar karon, ki ki bisoy roja nosto hoy na, vul kore kheye felle ki roja vange, ki ki karone roja nosto hoy,


error: Content is protected !!